অজনপ্রিয় মতামতের ঝুলি
১। সিন্ডিকেট
মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সিন্ডিকেট কাজ করে না, করতে পারে না। সিন্ডিকেশন বাস্তবে দীর্ঘমেয়াদে সম্ভবই না। তাই দাম বাড়লেই আমরা যেই ভুতুড়ে সিন্ডিকেটকে দোষ দিই সেটা আসলে নাই। সবই চাহিদা আর যোগানের খেলা। চাহিদা কমলে অথবা যোগান বাড়লেই দাম কমে যেতে বাধ্য। এতগুলো মিডিয়া প্রতিদিন একই ভুতের গান গায় কোন ধরনের বাস্তব প্রমাণ ছাড়াই।
২। মধ্যস্বত্ত্বভোগী
দাম কমানো আর কৃষকদেরকে ভালো দাম দেওয়ার চিন্তা মাথায় আসলেই সবার প্রথমে আমাদের যেই বুদ্ধি মনে আসে তা হলো মধ্যস্বত্ত্বভোগীদেরকে সিস্টেম থেকে বাদ দেওয়া। এই নাঈভ আইডিয়া তাদের মাথাতেই আসে যাদের পাইকারি বাজারের সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারনা নাই।
মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ করে যেটা আপনাদের চোখে পড়ে না—তা হলো, তারা বিভিন্ন উৎস থেকে মালামাল খুঁজে এনে শহরের খাদকদের নিয়ত চলমান চাহিদার জোগান দেয়। একজন কৃষকের কাছে আজকে আলু আছে কালকে থাকবে না। কিন্তু বাজারের দোকানির কাছে আপনার প্রতিদিন আলু পেতে হবে। মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা নিশ্চিত করে যেন আপনার পাশের দেকানে প্রতিদিন আলু থাকে, সে অসংখ্য উৎস ঘুরে এই সরবরাহ নিশ্চিত করে। কৃষকের পক্ষে এই কাজটা করা সম্ভাব না, বাজার এভাবে চলে না। আড়তদার ও পাইকারদেরকে সিস্টেমে লাগবেই।
৩। তরমুজের কেজি আর গুনতি
এইটা হচ্ছে সবচেয়ে হাস্যকর ক্যাচালের একটা। কৃষক কেজিতে বেচে নাকি গুনে গুনে বেচে তার সাথে বাজার কীভাবে বেচবে এর কোন সম্পর্ক নাই। বাজার যেভাবে খুশি সেভাবে বিক্রি করতে পারে। ক্রেতা হিসেবে আমরা দাম নিয়ে হৈচৈ করতেই পারি, কিন্তু কেজি না গুনতি এই ক্যাচাল একটা হুদা ক্যাচাল। বাজারে গুনে বেচলে কি তারা কেজির চেয়ে কমে বেচতো বলে আপনার ধারনা?
আসল ফোকাসটা হওয়া দরকার মধ্যস্বত্ত্বভোগী পাইকার ও সরবরাহকারীদেরকে বরং সাহায্য করা, তাদেরকে শত্রুতে পরিণত না করা। তারা বাজারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজে নিয়োজিত। তারা কেন দাম বাড়াতে বধ্য হয় সেইটার কিছু উত্তর রাস্তার ও আড়ত এলাকার চাঁদাবাজ পাতি নেতা, পুলিশ ও প্রশাসন দিতে পারবে, আগে এদের কান্ডকীর্তির খবর নেন।
বাকি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কাউকেই নিতে হবে না। বাজার নিজেই নিজের নিয়ন্ত্রক।